অনুসর্গ কাকে বলে? কত প্রকার ও কী কী? বৈশিষ্ট্য ও শ্রেণীবিভাগ ও প্রয়োজনীয়তা
অনুসর্গের বৈশিষ্ট্য ও শ্রেণীবিভাগ ও প্রয়োজনীয়তা
অনুসর্গ
অনুসর্গ কাকে বলে?
সাধারণত অনুসর্গ শব্দের পরে বসে। অনুসর্গ শব্দের অনু শব্দের অর্থ পরে বা পশ্চাতে, সর্গ মানে হলো সৃষ্টি বা ব্যবহার। বাংলা ভাষায় যে সকল অব্যয় জাতীয় শব্দ বাক্যের কোনো পদে পরে বসে ঐ পদের সাথে অন্যান্য পদের সম্পর্ক সৃষ্টি করে এবং বাক্যের অর্থ প্রকাশে সাহায্য করে তাদেরকে অনুসর্গ বলে।
যেমন: সাথে, সঙ্গে, মাঝে, আগে, মধ্যে, উপরে, নিচে, পক্ষে, বিপক্ষে ইত্যাদি।
অনুসর্গ কত প্রকার ও কী কী?
গঠন প্রকৃতি অনুযায়ী অনুসর্গ ২ প্রকার। যথা-
- বিশেষ্য অনুসর্গ বা নামজাত অনুসর্গ।
- ক্রিয়া অনুসর্গ।
বিশেষ্য অনুসর্গ কাকে বলে?
ক্রিয়া ব্যতীত অন্যান্য শব্দ থেকে যেসব অনুসর্গ এসেছে তাকে বিশেষ্য অনুসর্গ বলে। বিশেষ্য অনুসর্গের আরেক নাম নামজাত অনুসর্গ।
যেমন- আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে।
ক্রিয়া অনুসর্গ কাকে বলে?
ক্রিয়া পদ থেকে যেসব অনুসর্গ তৈরি হয়েছে, তাদেরকে ক্রিয়া অনুসর্গ বলে।
যেমন- তোমাকে দিয়ে এই কাজ হবে।
আরও পড়ুন:
ভাষা কী? ভাষা প্রকাশের মাধ্যম কয়টি ও কী কী?
আবার, গঠন অনুসারে শব্দ ২ প্রকার। যেমন-
- বিভক্তিহীন অনুসর্গ ।
- বিভক্তিযুক্ত অনুসর্গ।
বিভক্তিহীন অনুসর্গ-
অপেক্ষা, অবধি, কর্তৃক, ছাড়া, দ্বারা, নাগাদ, পর্যন্ত, প্রতি, বিনা, ব্যতীত, মতো, দরুণ, বনাম, বাবদ, বরাবর ইত্যাদি।
বিভক্তিযুক্ত অনুসর্গ-
আগে, ওপরে, কাছে, কারণে, জন্যে, দিকে, নীচে, পাশে, পেছনে, বাইরে, ভেতরে, মধ্যে, মাঝে, সঙ্গে, সাথে, সামনে, সম্মুখে, কারে, চেয়ে, থেকে, দিয়ে, লেগে, হতে, বদলে, বাদে ইত্যাদি।
আরও পডুন:
বর্ণ কি বা বর্ণ কাকে বলে? বর্ণ কত প্রকার ও কি কি?
বাক্য কাকে বলে? একটি সার্থক বাক্যের কী কী গুণ থাকা আবশ্যক?
নিম্নে কয়েকটি বাক্যে অনুসর্গ প্রয়োগ দেখানো হলো-
- সাথে- তোমার সাথে আমার অনেক কথা আছে।
- বিনে- মোবাইল বিনে বর্তমান জীবন প্রায় অচল।
- উপরে-সবার উপরে মানুষ সত্য।
- মাঝে- তোমার মাঝে আমার স্বপ্ন আছে।
- পরে- চেষ্টা পরে আসে ফল।
- পক্ষে- আমরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে থাকব।
অনুসর্গের বৈশিষ্ট্য
- অনুসর্গ এক ধরনের অব্যয় পদ।
- অনুসর্গের অর্থ রয়েছে ।
- পদের পরে বসে অন্য পদের সাথে সম্পর্ক সৃষ্টি করে।
- অনুসর্গ বিভক্তির মতো কাজ করে।
- বাক্যের অর্থ প্রকাশে সাহায্য করে।
- অনুসর্গ দিয়ে কারকও চেনা যায়।
অনুসর্গের প্রয়োজনীয়তা
বাংলা ভাষায় অনুসর্গের প্রয়োজনীয়তা ব্যাপক। অনুসর্গ অব্যয় জাতীয় শ্বদ হলেও এটি বিভক্তির ন্যায় কাজ করে বাক্য গঠনে অপরিসীম ভূমিকা পালন করে। এটি ছাড়া বাক্য গঠন অসম্ভব হয়ে পড়ে। এটি ছাড়া কারক অর্থ প্রকাশ করতে পারেনা।
আরও পড়ুন:
সন্ধি কাকে বলে? সন্ধি কত প্রকার ও কি কি?
বিভিন্ন চাকরি এবং ভর্তি পরীক্ষায় আসা বিগত সালের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর:
১) বাংলা ভাষায় যে অব্যয় শব্দগুলো কখন স্বাধীন পদরূপে, আবার শব্দ বিভক্তির ন্যায় বাক্যে ব্যবহৃত হয়ে বাক্যের অর্থ প্রকাশে সহায়তা করে সেগুলোকে কি বলে?
- স্বর
- বর্ণ
- অনুসর্গ
- উপসর্গ
উত্তর: অনুসর্গ
২) কোনটি বাক্যে স্বাধীন পদরূপে ব্যবহৃত হয়?
- শব্দ বিভক্তি
- অনুসর্গ
- শব্দ বিভক্তি
- কোনোটিই নয়
উত্তর: অনুসর্গ
৩) অনুসর্গ সম্পর্কে কোন বাক্যটি সঠিক নয়?
- ধাতুর পূর্বে বসে নতুন নতুন শব্দ গঠন করে
- কখনো কখনো বাক্যে স্বাধীন পদরূপে ব্যবহৃত হয়
- বাক্যের অর্থ সম্পাদনে সাহায্য করে
- কখনো বাক্যে বিভক্তিরূপে ব্যবহৃত হয়
উত্তর: ধাতুর পূর্বে বসে নতুন নতুন শব্দ গঠন করে
৪) সত্য বই মিথ্যে বলবো না। এখানে বই
- বিশেষ্য
- উপসর্গ
- অনুসর্গ
- প্রত্যয়
উত্তর: অনুসর্গ
৫) কোনটি অনুসর্গ?
- এর
- তরে
- এরে
- রে
উত্তর: তরে
আরও পড়ুন:
উপসর্গের অর্থবাচকতা নাই; কিন্তু অর্থ দ্যোতকতা আছে
ব্যাকরণ কাকে বলে? ব্যাকরণের কার্যাবলি আলোচনা কর
৬) অনুসর্গ শব্দের কোন বসে?
- পূর্বে
- মধ্যে
- পরে
- কোনোটাতেই নয়
উত্তর: পরে
৭) ‘হাসি দিয়ে ঘরটিকে ভরিয়ে রাখতে সে।’- বাক্যটিতে ‘দিয়ে’ হলো-
- অব্যয়
- প্রত্যয়
- অনুসর্গ
- উপসর্গ
উত্তর: অনুসর্গ
৮) কোনটি অনুসর্গ নয়?
- অপেক্ষা
- চেয়ে
- অন্য
- জন্য
উত্তর: অন্য
####